প্রাথমিক অবস্থায় যে ৫ লক্ষণ দেখলে বুঝবেন গলার ক্যানসারে ভুগছেন

গলার ক্যানসার একটি মারাত্মক রোগ। এটি কণ্ঠনালি ও গলার আশেপাশের টিস্যুতে আক্রান্ত হয়। প্রথম দিকে এর উপসর্গগুলো সাধারণত হালকা মনে হয়, তাই অনেক সময় মানুষ এগুলোকে সর্দি-কাশি বা হালকা গলা ব্যথা ভেবে উপেক্ষা করেন। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসা অনেকটা সহজ হয়, কারণ রোগের বৃদ্ধি ও পর্যায়ের উপর নির্ভর করে রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনা।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিচের ৫টি লক্ষণ প্রাথমিক অবস্থায় অনেক সময় সহজে চোখে পড়ে না, কিন্তু এগুলো দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি।

১. দীর্ঘস্থায়ী গলার ব্যথা

যদি আপনার গলায় কয়েক সপ্তাহ ধরে ব্যথা করে এবং স্বাভাবিকভাবে ভালো হচ্ছে না মনে হয়, তবে এটি গলার ক্যানসারের সম্ভাব্য লক্ষণ হতে পারে। ক্যানসারের কারণে ব্যথা গভীর এবং গিলতে সমস্যা হয়। অনেকেই এটিকে ‘রেজার ব্লেড গলা’ হিসেবে বর্ণনা করেন। বিশেষ করে যদি সর্দি বা অ্যালার্জির কোনো লক্ষণ না থাকে, তবে দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী গলার ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

২. কণ্ঠে পরিবর্তন বা হোয়াজনেস

ক্যানসার কণ্ঠনালির কোষ ও আশপাশের টিস্যুতে প্রভাব ফেলে। ফলে কণ্ঠে পরিবর্তন আসে, হোয়াজি বা দুর্বল স্বর দেখা দেয়। সাধারণ সর্দি-কাশির কারণে হোয়াজনেসের তুলনায় এটি স্থায়ী এবং সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে গুরুতর হয়ে ওঠে। এ ছাড়া কণ্ঠনালি ও ল্যারিংক্সে টিউমারের বৃদ্ধির কারণে স্বর তৈরি করার ক্ষমতা কমে যায়, যা কণ্ঠের স্বর পরিবর্তন ঘটায়। প্রাথমিক পর্যায়ে এই ধরনের পরিবর্তন চিকিৎসকের কাছে দেখানো উচিত।

৩. গিলতে কষ্ট বা ব্যথা

কিছু ক্ষেত্রে খাবার গিলতে শুরুতে সমস্যা হয় না, কিন্তু সময়ের সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। তখন খাবার গিলতে ব্যথা বা গলায় জ্বালা অনুভূত হতে পারে। দুই সপ্তাহের বেশি এমন লক্ষণ স্থায়ী হলে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।

৪. ঘাড়ে লাম্প বা ফোলাভাব

গলার ক্যানসার প্রায়ই ঘাড়ে লিম্ফ নোডের ফোলাভাব বা লাম্পের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। অনেকেই এটাকে সংক্রমণ ভেবে ভুল করেন, কিন্তু ক্যানসারের কারণে লাম্প সাধারণত শক্ত ও স্থায়ী হয়। এগুলো নিজে নিজে কমে না, তাই চিকিৎসকের পরীক্ষা খুব জরুরি।

৫. অপ্রত্যাশিত ওজন কমা ও ক্লান্তি

গলার ক্যানসারের কারণে খাবার খাওয়া ও গিলতে সমস্যা হয়, ফলে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। চিকিৎসকরা বলেন, শরীর ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বেশি শক্তি ব্যবহার করে, যা ক্লান্তি বাড়িয়ে দেয়। এ অবস্থায় খাদ্য কম খাওয়ার কারণে ওজন হঠাৎ কমে যেতে পারে। এই উপসর্গগুলো প্রাথমিক অবস্থায় তেমন লক্ষ করা যায় না, কিন্তু সময়ের সঙ্গে তা স্পষ্ট হয়ে আসে।

শেষকথা

চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধরনের কোনো উপসর্গই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। গলার ব্যথা, হোয়াজনেস, গিলে সমস্যা, ঘাড়ে লাম্প বা হঠাৎ ওজন কমা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করা ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *