
বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, যিনি বই পড়ার প্রতি গভীর অনুরাগী, তার শিক্ষক আব্দুর রবের কাছ থেকে অনেক অজানা তথ্য উঠে এসেছে।
আব্দুর রব ফরিদগঞ্জ উপজেলার গল্লাক দারুস সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার সুপার, যেখানে মাহফুজ আলম তার শিক্ষা জীবনের শুরু করেন। তিনি জানান, মাহফুজ আলমের বইয়ের প্রতি ভালোবাসা ছিল অপরিসীম। নিজে পড়ার পর সহপাঠীদের বইও পড়তেন। আজও তার এই বই পড়ার অভ্যাস অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, মাহফুজ আলম, তার ভাই মাহবুব আলম এবং আরও কয়েকজন মেধাবী ছাত্রসহ ২০১৩ সালের দাখিল পরীক্ষার্থীদের ব্যাচটি ছিল মাদ্রাসার ইতিহাসের সেরা। ঐ বছর মাদ্রাসাটি ৭টি বৃত্তি পেয়েছিল এবং সেরা ফলাফল অর্জন করেছিল। তবে, এই সাফল্যের পেছনে ছিল একাধিক শিক্ষকগণের সার্বক্ষণিক নজরদারি, যা মাহফুজের বই পড়ার প্রবণতাকে আরো দৃঢ় করেছে।
শিক্ষক বলেন, মাদ্রাসার ক্লাসে নির্ধারিত বইয়ের বাইরে অন্য বই আনা নিষিদ্ধ ছিল, কিন্তু মাহফুজ সেটা লুকিয়ে লুকিয়ে নিয়ে আসতেন এবং ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে সেগুলো পড়তেন। বই পড়ার প্রতি তার গভীর আগ্রহ ছিল এবং তিনি সব সময় নতুন নতুন বই পড়তে চাইতেন।
মাহফুজ আলম প্রাচীন বিষয় নিয়ে বেশি পড়াশোনা করতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়ার সময়েও তার ইতিহাস বিষয়ক বই লেখার আগ্রহ ছিল, যা পরবর্তীতে তার একাধিক বইয়ের প্রকাশিত হওয়ার পথ সুগম করেছে।
তার শিক্ষক আব্দুর রব আরও জানান, “৬ মাস আগে মাহফুজ আমাকে ফোন করে পিরোজপুর থেকে প্রকাশিত প্রাচীন পত্রিকা ‘তাবলিকা’-র সব সংখ্যা সংগ্রহ করতে বলেছিল। সে এসব নিয়ে গবেষণা করতে চায়। মাহফুজ মূলত ঐতিহ্যের সন্ধানী, যার কাজ প্রাচীনের বিষয়ে গবেষণা করা এবং সেগুলো মানুষকে জানানো।”
এছাড়া, শিক্ষক জানান, মাহফুজ শুধু বই পড়ত না, বরং মানবিকও ছিল। সহপাঠী, বন্ধু বা আশপাশের মানুষের বিপদে সহায়তা করতে তিনি কখনও পিছপা হতেন না। তার চুপচাপ স্বভাব সত্ত্বেও, তিনি সবার কাছে প্রিয়পাত্র ছিলেন।
এভাবে, মাহফুজ আলমের মানবিকতা, বই পড়ার প্রতি আগ্রহ এবং প্রাচীন বিষয় নিয়ে গবেষণার প্রতি তার ভালোবাসা তাকে আরো অনেকের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র করেছে।