কুষ্টিয়ায় ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে সাব-রেজিস্ট্রার অবরুদ্ধ

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন সাব-রেজিস্ট্রার বোরহান উদ্দিন সরকার। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ছাত্র-জনতা ও ভুক্তভোগীরা তাকে ভেড়ামারার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের নিজ কার্যালয়ে আটকে রাখেন।

একপর্যায়ে রাত ১১টায় উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনোয়ার হোসাইন এবং ভেড়ামারা থানার ওসি শেখ শহীদুল ইসলাম সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্সের তত্ত্বাবধানে বোরহান উদ্দিনকে কার্যালয় থেকে বের করা হয়।

জানা যায়, বোরহান উদ্দিন পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলায় সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত আছেন। অতিরিক্ত দায়িত্বের অংশ হিসেবে ভেড়ামারাতে বৃহস্পতিবার তার প্রথম কার্যদিবস ছিল।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সাব-রেজিস্ট্রারকে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ছাত্র-জনতা ও ভুক্তভোগীরা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন। এ সময় তারা সাব-রেজিস্ট্রারের ব্যক্তিগত সহকারীকে খুঁজতে থাকে। তাদের অভিযোগ, বোরহান উদ্দিন ব্যক্তিগত সহকারীর মাধ্যমে দলিলে ভুল ত্রুটি মার্জনার কথা বলে রেজিস্ট্রি করার নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাই তিনি ব্যক্তিগত সহকারীকে টাকাসহ পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন।

উপস্থিত জনতা অভিযোগ করে বলেন, সাব-রেজিস্ট্রারের কাজ সাধারণত বিকাল ৩টা পর্যন্ত। কিন্তু তিনি ত্রুটিপূর্ণ কিছু দলিল রেখে দিয়েছেন ইফতারির পরে করার জন্য। যে দলিলগুলো রেজিস্ট্রি করেছেন সেখানেও নামের ভুল বাবদ তার সহকারীকে দিয়ে ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। রাত ৮টার দিকে সাধারণ জনতার চাপে অতিরিক্ত দলিলগুলো রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন।

উপজেলার পরানখালি এলাকার বাসিন্দা রাকিব হোসেনের বরাত দিয়ে ভেড়ামারার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এক আত্মীয়ের দলিলে নাম ভুলের কারণে সাব রেজিস্ট্রারের সহকারী তাদের থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। যার কল রেকর্ড মোবাইলে রয়েছে। আমরা আসার পর থেকেই সে তার সহকারীকে টাকাসহ লাপাত্তা করে দিয়েছে।

দৌলতপুর থেকে আসা দলিল লেখক ও সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া যুবক রফিক বলেন, বোরহান উদ্দিন ত্রুটিপূর্ণ দলিলগুলোও টাকার বিনিময়ে রেজিস্ট্রি করে দেন বলে অভিযোগ আছে। দৌলতপুরেও এ বিষয়ে ছাত্র-জনতার মাঝে ইতিমধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিনকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত নয়। জনগণের উপকার করতে গিয়ে আমি ফেঁসে গেছি। সে আমার সহকারী নয় বরং আত্মীয়। তার মোবাইল নম্বর আমার কাছে নেই। নাম জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, টেনশনে আমার কিছু মনে পড়ছে না’।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনোয়ার হোসাইন বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়টি তদন্ত করার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *