
২০ বছর একই ছাদের নীচে সংসার করেছেন দম্পতি। আহার, নিদ্রা, যৌনজীবন যাপন সবই বজায় ছিল তাঁদের মধ্যে। তবে এই দীর্ঘ সময় স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে কোনো কথাই বলেননি। তাঁর এই ‘মৌনব্রত’র কথা সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসার পর অনেকেই হতবাক হয়েছেন। এত বছর স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্যজীবন পালন করেছেন শুধুমাত্র ইশারা ও আকার ইঙ্গিতেই।
তবে সন্তান লালন-পালন থেকে শুরু করে সংসারের স্বাভাবিক কার্যক্রমে এ দম্পতির মধ্যে আন্তরিকতা কিংবা দায়িত্ববোধের কোনো ঘটতি দেখা দেয়নি। সবচেয়ে বড় কথা এই সময়ের মধ্যে তাঁদের তৃতীয় সন্তানেরও জন্ম হয়েছিল। এরপর স্ত্রী অনেক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু স্বামীকে কথা বলাতে সফল হননি। প্রশ্নের উত্তরে কেবল মাথা নাড়িয়ে, ইশারা ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নিজের বক্তব্য পেশ করেছেন স্বামী।
আরও পড়ুনঃ ঢাবিতে গভীররাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের ভিডিও শেয়ার করে যা বললেন সাদিক কায়েম
এই দম্পতির সন্তানেরা জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বাবার এই অদ্ভুত নীরবতা দেখেই বড় হয়েছেন। তাঁরা বাবা-মায়ের কথোপকথন শুরু করার জন্য একটি টিভি চ্যানেলের দ্বারস্থ হন। সেখানে একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় ওই দম্পতিকে। অনুষ্ঠানটি এমন এক জায়গায় আয়োজন করা হয়, যেখানে তারা প্রথম বেড়াতে এসেছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে বহু বছর পর, স্বামী অবশেষে তাঁর নীরবতার কারণ জানান। ঈর্ষা ও রাগ থেকেই তিনি স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কারণ সেই সময় স্ত্রী সন্তান ও পরিবার নিয়ে মশগুল থাকতেন। নিজেদের মধ্যে কথা বলার কোনও কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। এক দিন একটি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ার পর তাঁরা কথা বলা বন্ধ করে দেন। স্ত্রীর কাছে তাঁর গুরুত্ব কমে গিয়েছে এই অভিমানে মৌনতা অবলম্বন করাকেই শ্রেয় বলে মনে করে নেন। টিভির অনুষ্ঠানে প্রথম দিকে স্ত্রীর সামনে মুখ খুলতে বেশ কিছুটা দ্বিধায় ভুগছিলেন স্বামী।
আরও পড়ুনঃ সচিবালয় অভিমুখে ইশরাক সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা
তবে পরে কয়েক মিনিটের নীরবতা ভেঙে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন স্বামী। তিনি স্ত্রীকে জানান যে এই নীরবতা তাকে কষ্ট দিয়েছে। এর জন্য দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে নেন। তার পর তিনি স্ত্রীকে এত বছর তাঁর সঙ্গে কাটানোর জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। দীর্ঘ দু’দশক পর প্রথম বারের মতো স্বামী যখন কথা বলছিলেন তখন স্ত্রী চুপ করেছিলেন। জাপানে সংঘটিত এ চাঞ্চল্যকর ঘটনার অনুষ্ঠানটি টিভিতে প্রচারিত হওয়ার পর তা গোটা দেশে ভাইরাল হয়। পরে এই গল্পটি নানা দেশের সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।