ভারতের তিনটি ওষুধ কোম্পানির তৈরি কাশির সিরাপ শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। মাত্র ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য তৈরি এই সিরাপগুলোতে ডায়াথিলিন গ্লাইকোল নামের এক বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে।
যেসব কফ সিরাপ নিয়ে সতর্কতা:বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবৃতি অনুযায়ী নিচের তিনটি সিরাপে বিপজ্জনক মাত্রায় বিষাক্ত রাসায়নিক পাওয়া গেছে—
ক্র. কোম্পানির নাম সিরাপের নাম
১ শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যাল কোল্ডরিফ (ColdRef)
২ রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যাল রেসপিফরেশ টিআর (Respifresh TR)
৩ শেপ ফার্মা রিলাইফ (Relife)
কেন এই সিরাপ বিপজ্জনক?ডায়াথিলিন গ্লাইকোল সাধারণত কাশির সিরাপে ব্যবহৃত হয় তরলতা বজায় রাখতে। কিন্তু এই রাসায়নিকের মাত্রা যদি অনুমোদিত সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন এটি বিষের মতো কাজ করে। শিশুদের কিডনি ও স্নায়ুতন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে এবং এমনকি মৃত্যুও ঘটাতে পারে।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, এই তিন সিরাপে ডায়াথিলিন গ্লাইকোলের পরিমাণ স্বাভাবিক সীমার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি, যা শিশুদের জন্য প্রাণঘাতী।
মৃত্যুর ঘটনা ও উদ্বেগগত আগস্টে ভারতের শ্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালের তৈরি কোল্ডরিফ সিরাপ সেবনের পর ১৭ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালে অপর এক ভারতীয় কোম্পানির সিরাপ সেবনে উজবেকিস্তান, ক্যামেরুন ও গাম্বিয়ার ১৪১ জন শিশু মারা যায়।
এই ঘটনার পর বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এবং শিশুদের কাশির সিরাপ সেবনে বাড়ছে সতর্কতা।
ভারতের প্রতিক্রিয়াভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO) জানিয়েছে, তারা ডব্লিউএইচও’র সতর্কবার্তাকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছে এবং দেশজুড়ে ওষুধ মান নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
WHO-এর পরামর্শডব্লিউএইচও বলেছে—
“অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান, শিশুরা যেন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো কাশির সিরাপ না খায়। সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ দ্রুত এই পণ্যগুলো বাজার থেকে প্রত্যাহার করবে।”