ব্রেকিং নিউজঃ দেশে ফের বার্ড ফ্লু শনাক্ত

দীর্ঘ সাত বছর পর বাংলাদেশে ফের বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। যশোর জেলার একটি মুরগির খামারে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এতে তিন হাজার ৯৭৮টি মুরগির মধ্যে এক হাজার ৯০০টি মারা গেছে। বাকি মুরগিগুলোও মেরে ফেলা হইছে। এটি ২০১৮ সালের পর প্রথমবারের মতো শনাক্ত হলো।

বুধবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে দেশের প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।

বিপিএ’র সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, পোল্ট্রি খাত বর্তমানে গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। সম্প্রতি যশোরে একটি খামারে বার্ড ফ্লু শনাক্ত হওয়ার পর, দেশের পোল্ট্রি শিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। ওই খামারে তিন হাজার ৯৭৮টি মুরগির মধ্যে এক হাজার ৯০০টি মারা গেছে এবং বাকি মুরগি মেরে ফেলা হয়েছে। অতীতে আমরা দেখেছি, বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের কারণে বহু খামার বন্ধ হয়ে গেছে। লাখ লাখ মুরগি নিধন করতে হয়েছে এবং হাজার হাজার খামারি তাদের জীবিকা হারিয়েছেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেছেন, বার্ড ফ্লু প্রতিরোধ ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার প্রস্তুতি নিয়েছে। পোল্ট্রি খামারিদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সীমান্ত এলাকায়ও সতর্কতা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এখন আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, কারণ এবারের পরিস্থিতি আগের মতো নয়। ক্রেতাদের হাঁস-মুরগি বা ডিম খাওয়া বন্ধ না করতে অনুরোধ করেছেন তিনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, আমাকে মার্চের শুরুতে বার্ড ফ্লু শনাক্তের বিষয়টি জানানো হয়েছে। ফ্লুর বিস্তার যাতে বাড়তে না পারে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং এই ফ্লু বিস্তার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যশোরের খামারটি পরিদর্শন করেছেন এবং ফ্লুটি কীভাবে বাংলাদেশে এসেছে, তার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছেন। ফ্লুর পরীক্ষাবিষয়ক টেকনিক্যাল বিষয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলতে পারবেন।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের মার্চে বাংলাদেশে প্রথম বার্ড ফ্লু দেখা দেয়। ওই সময় প্রায় ৩৭০টি খামার বন্ধ হয়ে যায় এবং ১০ লাখেরও বেশি মুরগি এই ফ্লুয়ের কারণে মেরে ফেলা হয়। এতে খামারির আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হন।

২০০৮ সালের মে মাসে বাংলাদেশে মানুষের শরীরে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর ২০১৩ সালে বাংলাদেশে আবারও বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাব ঘটে। তবে সেবার তেমন বড় কোনো ক্ষতির মুখে পড়েনি পোল্ট্রি শিল্প। তবে ২০১৭ সালের শেষের দিকে আবারও দেশের বেশ কিছু এলাকায় বার্ড ফ্লু দেখা দেয়। যার ফলে বেশ কিছু খামারি ক্ষতির সম্মুখীন হন। এসব প্রাদুর্ভাবে প্রায় ৫০ লাখ মুরগি মেরে ফেলা হয় এবং অনেক খামার বন্ধ হয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *